(MEANING OF JESUS’ DEATH ON THE CROSS)
ইহুদীরা ঈসাকে চিনতে বা স্বীকার করে নিতে পারে নি
কিতাবুল মোকাদ্দসে লেখা আছে—-
ইউহোন্না ১:৯-১৩ সেই আসল নূর, যিনি প্রত্যেক মানুষকে নূর দান করেন, তিনি দুনিয়াতে আসছিলেন। 10তিনি দুনিয়াতেই ছিলেন এবং দুনিয়া তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল, তবু দুনিয়ার মানুষ তাঁকে চিনল না। 11তিনি নিজের দেশে আসলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না। 12তবে যতজন তাঁর উপর ঈমান এনে তাঁকে গ্রহণ করল তাদের প্রত্যেককে তিনি আল্লাহ্র সন্তান হবার অধিকার দিলেন। 13এই লোকদের জন্ম রক্ত থেকে হয় নি, শারীরিক কামনা বা পুরুষের বাসনা থেকেও হয় নি, কিন্তু আল্লাহ্ থেকেই হয়েছে।
ব্যাখ্যা
১১ আয়াতে লেখা আছে তিনি তার নিজের লোকদের কাছে আসলেন, কিন্তু তারা তাকে গ্রহন করলো না। এই আয়াত আসলে ইহুদীদেরকে বোঝাচ্ছে, কারণ তারা হযরত ইব্রাহীমের বংশধর, যাকে আল্লাহ্ ডেকেছিলেন এবং তার থেকেই আল্লাহ্ ইহুদী জাতিকে এনেছিলেন এবং তাদের মসীহ্ হলেন ঈসা মসীহ্।
ইহুদী জাতি এই সত্য বুঝতে পারলো না। তারা মনে করতো যে, মসীহ্ আসবে শুধুমাত্র তাদের জন্য, এবং রোমান শত্রুদের থেকে তাদের রক্ষা করবেন এবং তাদের রাজ্য আবার প্রতীষ্ঠা করবেন।
দুনিয়ার অন্যান্য জাতির জন্য কি রয়েছে?
কিতাবুল মোকাদ্দসে লেখা আছে —
প্রেরিত ১৭:২৬-২৭ তিনি একজন মানুষ থেকে সমস্ত জাতির লোক সৃষ্টি করেছেন যেন তারা সারা দুনিয়াতে বাস করে। তারা কখন কোথায় বাস করবে তাও তিনি ঠিক করে দিয়েছেন। 27 আল্লাহ্ এই কাজ করেছেন যেন মানুষ হাতড়াতে হাতড়াতে তাঁকে পেয়ে যাবার আশায় তাঁর তালাশ করে। কিন্তু আসলে তিনি আমাদের কারও কাছ থেকে দূরে নন।
ব্যাখ্যা
এই আয়াত দুটি খুব অসাধারণ, এখানে দেখানো হচ্ছে সব জাতির উৎস একই, এবং যদিও এক জাতির সাথে অন্য জাতির ভিন্নতা আছে, তবুও সবার রক্ত একই। (ভিন্ন জাতির মধ্যেও একজনের রক্ত অন্যজন গ্রহন করতে পারে)। তাই, সকল জাতির মধ্যে একটা একতা আছে।
কিন্তু এখানে আবার ভিন্নতাও রয়েছে কারণ আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছিলেন কোথায় এবং কখন তারা বাস করবে এবং প্রত্যেকটি জাতি থেকেই মানুষ তার অন্বেষণ করবে। তারা তার অন্বেষণ করেছিল, কিন্তু তা আশানরূপ ছিল না কারণ জাতিগুলো বিভিন্ন ধর্ম উৎপত্তি করলো, বিভিন্ন ধর্ম আল্লাহর কাছে পৌছানোর বিভিন্ন উপায় ব্যক্ত করলো। পরিস্কারভাবেই, সব ধর্ম একসাথে ঠিক হতে পারেনা কারণ ধর্মগুলোর শিক্ষাও ছিল একটি থেকে অপরটি ভিন্ন এবং যদি ১+১=২ হয়; তাহলে ৩ বা ১০ একই সাথে সঠিক উত্তর হতে পারে না।
এরপর আমরা যদি কিতাব থেকে ৩০ ও ৩১ আয়াত পাঠ করিঃ
প্রেরিত ১৭:৩০-৩১ আগেকার দিনে মানুষ জানত না বলে, আল্লাহ্ এই সব দেখেও দেখেন নি। কিন্তু এখন তিনি সব জায়গায় সব লোককে তওবা করতে হুকুম দিচ্ছেন, 31 কারণ তিনি এমন একটা দিন ঠিক করেছেন যে দিনে তাঁর নিযুক্ত লোকের দ্বারা তিনি ন্যায়ভাবে মানুষের বিচার করবেন। তিনি সেই লোককে মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলে সব মানুষের কাছে এর প্রমাণ দিয়েছেন।”
আয়াত ৩০ আমাদের আশা দেয় যে আল্লাহ্ পূর্বে জাতিদের সত্য না জানার অজ্ঞতাকে দোষ হিসেবে ধরেননি এবং এখন সত্য আমাদের সামনে এসেছে বোধগম্য হয়ে এবং প্রমানিত হয়ে। ঈসাকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করে, পিতা আল্লাহ্ প্রমান করেছেন যে ঈসাই একমাত্র সেই জন যাকে আমাদের জন্য প্রেরণ করছেন, তিনিই সেই জন যাকে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে আমাদের আল্লাহ্ অ নাজাতদাতা হিসেবে, তিনিই সেই জন যিনি সবার বিচার করতে আসবেন।
এ বিষয়ে আরও দুটি আয়াত নীচে দেওয়া হল( কিতাবুল মোকাদ্দসে লেখা আছে):
ইউহোন্না ১৪:৬ ঈসা তাকে বললেন, “আমিই পথ, সত্য আর জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না।
প্রেরিত ৪:১২ আর অন্য কারো কাছে নাজাত নেই; কেননা আসমানের নিচে মানুষের মধ্যে এমন আর কোন নাম দেওয়া হয় নি, যে নামে আমরা নাজাত পেতে পারি।
সবশেষে, আমরা ঈসার বিষয়ে ইশাইয়া নবীর যে ভবিষ্যতবাণী কিতাবে রয়েছে তা পাঠ করি:
ইশাইয়া ৫৩:৩-৬ তিনি অবজ্ঞাত ও মানুষের ত্যাজ্য, ব্যথার পাত্র ও যাতনা পরিচিত হলেন; লোকে যা থেকে মুখ আচ্ছাদন করে, তার মত তিনি অবজ্ঞাত হলেন, আর আমরা তাঁকে মান্য করি নি। 4সত্যি, আমাদের যাতনাগুলো তিনিই তুলে নিয়েছেন, আমাদের ব্যথাগুলো তিনি বহন করেছেন; তবু আমরা মনে করলাম, তিনি আহত, আল্লাহ্ কর্তৃক প্রহারিত ও দুঃখার্ত। 5কিন্তু তিনি আমাদের অধর্মের জন্য বিদ্ধ, আমাদের অপরাধের জন্য চূর্ণ হলেন; আমাদের শান্তিজনক শাস্তি তাঁর উপরে বর্তিল এবং তাঁর ক্ষতগুলো দ্বারা আমাদের আরোগ্য হল। 6আমরা সকলে ভেড়াগুলোর মত ভ্রান্ত হয়েছি, প্রত্যেকে নিজ নিজ পথের দিকে ফিরেছি; আর মাবুদ আমাদের সকলের অপরাধ তাঁর উপরে বর্তিয়েছেন।
ব্যাখ্যা
এই সারা দুনিয়ায় কত শত জাতি আছে। যেখানে বেশিরভাগ স্বাধীন জাতি, যারা নিজেরাই নিজেদের দেশ চালায়, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সবাই আমরা গুনাহের দাস। আমরা কেউই স্বাধীন নই আল্লাহর ইচ্ছা পালন করতে।
৬ নং আয়াতে যা লেখা আছে তা আমাদের সকলের জন্য সত্যঃ
আমরা সকলে ভেড়াগুলোর মত ভ্রান্ত হয়েছি, প্রত্যেকে নিজ নিজ পথের দিকে ফিরেছি; আর মাবুদ আমাদের সকলের অপরাধ তাঁর উপরে বর্তিয়েছেন।
//////////